ঘটনার সূত্রপাত রবীন্দ্র জয়ন্তী অর্থাৎ ৮ মে শুক্রবার। ওইদিন রাতে, কোচবিহার সরকারি কলেজের অধ্যাপক পিয়ালী সিংহ রায় এবং অধ্যাপক অমিত সিংহ রায়, তাঁদের হৃদয়পুরের ভাড়া বাড়ির ছাদে একটি আওয়াজ শুনতে পান। পরেরদিন সকালে, তাঁরা ছাদে উঠে দেখেন একটি ভারি বস্তু। সেটাতে চিরকুট বাঁধা। সেটি খুলতেই অবাক হন তাঁরা। দাবি, ওই চিঠিতে লেখা, ”৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, প্রথমে ২৫ হাজার পরে বাকি ৩ লক্ষ ২৫ হাজার! নইলে দুই পুত্র সন্তানের মারাত্মক ক্ষতি করে দেওয়া হবে।”
এই রহস্যজনক চিঠি পাওয়ার পরেই বারাসাত থানার দ্বারস্থ হন আতঙ্কিত দম্পত্তি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। কিন্তু এই তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকালীন ফের, অর্থাৎ শনিবার রাতেই আবার একটি চিঠি ফেলা হয় ওই বাড়ির ছাদে। যেটাও হুমকি চিঠি বলেই জানা যাচ্ছে। ফের পুলিশে জানান তাঁরা। ঘটনার তদন্ত চলছে ইতিমধ্যেই। সূত্রের খবর, এক সন্দেভাজনকে নজরে রাখছে পুলিশ। স্থানীয় কাউন্সিলর স্বপ্না বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ”সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারছি। তাঁরা জানাননি। আমি পাশে আছি। পুর-পারিষদ অরুণ ভৌমিককে বলছি। বিষয়টি আমরা দেখে নিচ্ছি। প্রশাসন, এবং আমাদের তরফে যতটা সাহায্য প্রয়োজন সবটা করা হবে। মানুষের পাশে থাকা আমাদের দায়িত্ব।”
প্রসঙ্গত, ওই দম্পত্তি চাকরিসূত্রে বাস করেন, কোচবিহারেই। কিন্তু ছোট পুত্রের অন্নপ্রাশন উপলক্ষ্যে, তাঁরা এই বাড়িতে ফেরেন। পরে, লক ডাউন চলে আসায়, আর ফিরতে পারেননি। এই ভাড়া বাড়িতেই রয়ে যান তাঁরা। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই অধ্যাপনা করেন বহুবছর ধরে। বারাসাত সরকারি কলেজেও অধ্যাপনা করেছেন দুজনেই। বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন পিয়ালী সিংহ রায়। এখন কোচবিহারে চাকরি করেন।
এদিকে, স্থানীয়রা বলছেন, এইরকম ঘটনা ওই এলাকায় নজিরবিহীন। এই পরপর দু’বার, ‘চিঠি-কাণ্ডে’র পরে, স্বাভাবিভাবেই অবাক স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই। যদিও ওই অধ্যাপিকাও বলছেন, ”আতঙ্কে আছি। চিন্তা তো আছেই। একটি সন্তানের শরীরটাও খারাপ। তার মধ্যেই এসব। আবার চিঠি পেলাম। পুলিশকে ফের ফোন করে জানিয়েছি। তাঁরা উপযুক্ত ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন।”
________________________________________
১০.০৫.২০২০
বারাসাত
প্রতীকী চিত্র