পরিযায়ীদের পাশে ‘রবিনহুড’ সোনু সুদ। ইতিমধ্যেই, বলিউডের সব তারকাকে পিছনে ফেলে, জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠেছে তাঁর নাম। তাঁর কীর্তিতে কুর্ণিশ এর বন্যা বইয়ে যাচ্ছে সোশ্যাল দুনিয়ায়।

প্রসঙ্গত, হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফিরেয়ে সব মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন অভিনেতা সোনু সুদ। তারকার পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর উদ্যোগকে আগেই মহৎ বলে উল্লেখ করেছিলেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি, সোনুর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎও করেন রাজ্যপাল৷ তাঁর কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি এবং জানিয়েছেন এই কাজে সবরকম সাহায্য করতে আগ্রহী তিনি। তাঁর জীবনের বিভিন্ন ঘটনা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে।

এইরকম এক পরিস্থিতিতে, এত গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যেই, সোনু সুদের কাছে অভিনব আবদারের পাহাড় জমছে ক্রমশ! মজার ছলে কেউ কেউ নিজেদের হাসির খোরাক জোগাতে প্রশ্ন করছেন সোনুকে। বিব্রত না হয়ে উত্তরও দিচ্ছেন অভিনেতা! কিন্তু দিন যত যাচ্ছে ততই এই আজগুবি দাবি আর প্রশ্নের প্রকোপ বাড়ছে। কেউ তাঁর ঘরের সমস্যা, কেউ আবার একেবারে হাসির উপজীব্য হিসেবে উপস্থাপন করছেন প্রশ্ন! যা এই গুরুত্বপূর্ণ কাজের পরিপ্রেক্ষিতে একদমই প্রাসঙ্গিক না।

বিভিন্ন রাজ্যের সহায়তা নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষিতভাবে ঘরে ফেরাচ্ছেন সোনু। শুধু যাতায়াতই নয় পথে তাঁদের খাবার জল সবকিছুর ব্যবস্থা করছেন অভিনেতা। গোটা প্রক্রিয়ার তদারকিও করছেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে। সোনু সুদ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ দেশের প্রতিটি পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফেরা না পর্যন্ত থামবেন না তিনি। রিল লাইফে নন রিয়েল লাইফেও তিনি যে সুপারহিরো সেকথাই বলছেন নেট দুনিয়ার বাসিন্দারা। বিনোদন জগৎ থেকে রঙ নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সোনুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
পঞ্জাবের সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকেই উঠে এসেছেন সোনু। মুম্বইয়ের আসার পর প্রথমদিকে শহরতলী এলাকাতে থাকতেন তিনি। সেসময় তিনি যাতায়াত করতেন লোকাল ট্রেনে। ১৯৯৭ সালে সোনুর লোকাল ট্রেনে যাতায়াতের পাস খুঁজে বের করেছেন এক নেট নাগরিক। যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরনো দিনের সোনুর লোকাল ট্রেনের সেই পাস শেয়ারও করেছেন। লিখেছেন, ”যিনি নিজেই একসময় কষ্ট করেছে, তিনি অন্য মানুষের কষ্ট বুঝবেন সেটাই স্বাভাবিক।’ সেই ট্রেনের পাসে দেখা যাচ্ছে, মাত্র ৪২০ টাকা দিয়ে বরিভালি থেকে চার্জগেট যাতায়াত করতেন তিনি নিয়মিত। ট্রেনের পাসে দেখা যাচ্ছে তুখন সোনুর বয়র ছিল মাত্র ২৪ বছর। নেটনাগরিকের পোস্ট করা পুরনো দিনের এই স্মৃতি চোখের সামনে আসায় নস্টালজিক হয়ে পড়েছেন সোনুও। উত্তরে তিনি লিখেছেন, জীবনটা আসলে একটি গোল বৃত্ত।

লকডাউনে শুধু পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফিরিয়ে দিয়েই খান্ত থাকছেন না তিনি, সকলের টুইটের জবাবও দিচ্ছেন অভিনেতা। কিছু টুইটে মজা করে বুদ্ধির সঙ্গে দিচ্ছেন সোনু।
সম্প্রতি এক খুদের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তাঁর বাবার হয়ে সোনুকে প্রশ্ন করেছেন, সোনু আঙ্কেল, শুনেছি আপনি সকলকে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন। তাই পাপা জিজ্ঞেস করছেন, ”মাকে দিদার বাড়ি পাঠাতে পারবেন কিনা?” মজা করে বানানো এই ভিডিয়োর জবাবও সোনুও মজা করে লিখেছেন, “খুব কঠিন কাজ চেষ্টা করবো।”

আবার এক মহিলা সোনুকে টুইট করেছেন, “স্বামীর সঙ্গে আর লকডাউনে বন্দি থাকতে পারছি না তিনি। তাঁকে বাপের বাড়ি পাঠান।” উত্তরে মজা করে সোনু লিখেছেন, ”আমার কাছে এর থেকেও ভালো রাস্তা আছে, আমি দুজনকে একসঙ্গে গোয়া পাঠাতে পারি।”
এমনই মজার ছলে নানা খুনসুটি করে সোনু প্রচুর সংখ্যক মানুষের টুইটের উওর দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কিছু সংখ্যক মানুষের মানসিক অবস্থান নিয়ে। অনেকেই বলছেন, একটা মানুষের মহান কাজের ক্ষেত্রে বাহবা না দিয়ে এই ধরনের কথা বলে বিব্রত করা, বেশ বিরক্তিকর।
PB
০১.০৬.২০২০