যুগ যুগ ধরে তাঁর পরিচিতি! সংকট নিরসনে তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে না একবিন্দুও। তাঁকে ঘিরেই রচিত হয় কল্পকথা, রচিত হয় ইতিহাস, যা সময়ের চলমানতার সঙ্গেই অগ্রসর হয় প্রতিনিয়ত। সেই বজরঙ্গবলী হনুমান-কথায়, ফের রেকর্ড গড়ল দেশজুড়ে। অবিশ্বাস্যভাবে ৯ বছর আগের এক ভিডিও ছাড়াল ১০০ কোটি দর্শক গণ্ডি! নরেন্দ্র মোদী-শাসিত ভারতে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই নতুন রেকর্ড গড়লেন রামভক্ত হনুমান! ইউটিউবে একধাক্কায় টপকে গেল ১ বিলিয়ন ভিউজের রেকর্ড! তাঁকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হনুমান চালিশা শুধুমাত্র ইউটিউবেই দেখে ফেললেন কম পক্ষে ১০০ কোটি মানুষ, যা ভারতবর্ষের ইউটিউব ইতিহাসে বিরল! পাঞ্জাবের ‘দা লাচি’ গানের পরে, এই রেকর্ড খুঁজে পাচ্ছেন না অনেক বিশেষজ্ঞই!

এই গানটিতে অভিনয় করেছিলেন গুলশান কুমার। গানটির কণ্ঠ ছিল সঙ্গীতশিল্পী হরিহরণের। ‘টি সিরিজে’র ব্যানারে প্রায় ৯ বছর আগেই এই হনুমান চালিশার ভিডিওটি প্রকাশ পায়।
সেই ভিডিওর লিঙ্ক: https://youtu.be/AETFvQonfV8

প্রধানত, ভারতের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে জনপ্রিয় হনুমান। দেবতা হিসেবে তাঁর জায়গা বেশ উচ্চস্থানে। মানুষের বিশ্বাস, ভালোলাগা, ধর্মীয় অনুভূতির অনেকটা জুড়েই এই দেবতার বাস। শ্রী রামের ছায়াসঙ্গী এই হনুমান দেবকে কেন্দ্র করেই মূলত গড়ে ওঠে হনুমান চালিশা। যা বহু যুগ আগে রচনা করেছিলেন, তুলসী দাস। এই পুরান কথা, যাকে অনেকেই বলেন পাঁচালী অথবা ব্রতকথা। এই কথাকেই বহন করে দিনের পর দিন মানুষের বিশ্বাস আভির্ভূত হয়ে চলেছে। নিয়মিত শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা কামনায়,
“শ্রীগুরু চরণ সরোজ রাজ, নীল মোহন মুক্তার সুধারি.. বর্নাও রঘুবর বিমল যশু, জো দেখু ফল চারি… বুদ্ধিহীন তানু জানিকে, সমিরও পবন কুমার…”
এইভাবেই আকৃষ্ট হয়ে চলেন সাধারণ মানুষ।তাঁদের জীবনের প্রতিনিয়ত এই হনুমান চালিশা উপস্থিত হয় বারবার। অনেকেই বলেন, দেশে বিজেপি শাসিত সরকার আসার পর, শাসক দলের হাত ধরে হনুমানের চিরাচরিত মাহাত্ম্যের প্রিসার বেড়েছে, যা অচিরেই ভক্তি শ্রদ্ধার দিকটাও বাড়িয়ে দিয়েছে ক্রমশ। যারফলেই বহুক্ষেত্রেই আবর্তিত হয়েছে, রামায়ণ যুগের বজরঙ্গবলী। যা সামগ্রিকভাবে সহায় হয়ে উঠেছে, ভালো রাখার, ভালো থাকার। তাই যেন, অল্পদিনেই ফের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি, মনে করছেন অনেকেই।
এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে একধাক্কায় এই রেকর্ড নিয়ে মনস্তত্ত্ববিদদের একাংশ মনে করেন, লক ডাউন পরিস্থিতিতে গৃহবন্দি দশায় মানুষের ব্যস্ততা কমেছে। বারবার বিভিন্ন ধরণের খবর, বিপর্যয়, স্বাভাবিভাবেই মানুষের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হতে পারে, খানিকটা আঁকড়ে ধরার মানসিকতা থেকেও বহু মানুষ এই মহান দেবতার শরণ নিতে পারেন।
কিন্তু সবকিছুর মধ্যেও, হনুমান দেবের মহান প্রসা রের এই নতুন কীর্তি, অভিভূত করেছে সনাতন ধর্মের প্রায় সকলকেই!
২৮.০৫.২০২০
কলকাতা