Exclusive: ‘পিএম কেয়ার্সে’ কোটি কোটি! খরচ কত? আছে কিছু বাকি?

২০২০ সালের প্রথম থেকেই খানিকটা প্রচার পাচ্ছিল একটা নাম। যার বিস্তার দিন আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ক্রমশ। একটা সময় এই কয়েক অক্ষরের ‘চিনা’ ভাইরাস নাড়িয়ে দিতে শুরু করে পৃথিবীর ভিত্তিকে। সেই সংকটকে কাটাতে, তাকে মোকাবিলা করতে লক ডাউন শুধু নায়ে, অর্থের বিপুল চাহিদা প্রয়োজন হয়। স্বাভবিকভাবেই এই চাহিদা পূরণ করতে উদ্যোগ নেন এদেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ঘোষণা করেন পিএম কেয়ার্স ফান্ডের। যে ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ঝড়ের গতিতে অনুদান উপচে পড়ে এই ফান্ডে। কিন্তু এই টাকার খরচের হিসাব? তা নিয়ে একটা প্রশ্ন বা বিতর্ক থাকলেও, এবার সেই হিসাবের প্রকাশ হল। যা পৌঁছেছে আমাদের কাছে, অর্থাৎ ‘খবরওয়ালাটিভি.কমে’র কাছে।

যেখানে দেখা যাচ্ছে, সর্বমোট ৯ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা অনুদান করা হয়েছে এই ফান্ডে। যার মধ্যে মূলত: ২০০০ কোটি টাকা খরচ করে মোট ৫০,০০০ টি ভেন্টিলেটর ক্রয় করা হয়েছে। মোট ১০০০ কোটি টাকা দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। ১০০ কোটি টাকা, করোনা মোকাবিলা এবং তার প্রতিষেধক সম্পর্কিত কাজে এখনও পর্যন্ত এই ফান্ড থেকে খরচ করা হয়েছে। ১০০০ কোটি টাকা পশ্চিমবঙ্গের জন্য, ‘আমপান’ মোকাবিলায় অগ্রিম হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, এই ফান্ড থেকেই জরুরি পরিস্থিতিতে উড়িশ্যার জন্য ৫০০ কোটি দেওয়া হয়েছে, ‘আমপান’ মোকাবিলায়। এরপর এখনও পর্যন্ত এই ফান্ডের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৫ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই অর্থ এখনও খরচ হয়নি। এই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রে। যে হিসেব প্রকাশিত হওয়ার পর, স্পষ্টতই এর স্বচ্ছতার বিষয়ে সওয়াল করেছেন, কেন্দ্রের শাসক দলের নেতারা।

প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতিতে, নিদারুণ সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয় সমগ্র বিশ্বের অলিন্দে। আজও যা অবিচল! প্রতিনিয়ত বিতর্ক আর আশঙ্কার দোলাচলেই করোনা ভাইরাস এগোচ্ছে তরতরিয়ে। এখনও বন্ধ বহু দেশ। বিপর্যস্ত অর্থনীতি এখনও তলানিতেই বাসা বাঁধছে ক্রমশ।

এইরকম পরিস্থিতিতেই ভারতেও বিরাট প্রভাব বিস্তারিত হয়। মার্চের শেষ সপ্তাহের মধ্য গগনে ই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন লক ডাউন। যে শব্দের সঙ্গে ১৩০ কোটির মুখোমুখি সাক্ষাত্ ঘটে প্রথম। দেশজুড়ে অভাবনীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়! একের পর এক আক্রান্তের খবর আসতে থাকে। একাধিক রাজ্য প্রায় গ্রাস করে করোনা। যা এখনও চলছে। লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে আরও বেড়েছে আক্রান্তের হার, এমনও অভিযোগ উঠছে কিছুক্ষেত্রে। কিন্তু মৃত্যুর হারের শতাংশে ভারত ভালো জায়গায় থাকলেও, বিশ্বের করোনা আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে এই দেশ কিন্তু প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছে। যা অশনিসংকেত হিসেবেই মনে করছেন অনেকেই। চিকিৎসকদের একাংশের যুক্তি, প্রথম থেকেই লক ডাউন কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা হলে, আন্তর্জাতিক বিমান এর ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরও আরোপ করা হলে, ভারত আরও ভালো জায়গায় থাকত, এভাবে লক্ষ লক্ষ আক্রান্তের সংখ্যার দিক এগোত না।

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন মধ্যম থেকে প্রবল সাহায্য লাভ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘পিএম কেয়ার্স’ ফান্ড। বিভিন্ন সংস্থা, গোষ্ঠী, ব্যক্তির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অনুদান করা হয় এই ফান্ডে। যা মূলত করোনা এবং দেশের জরুরী অবস্থা স্থিতিশীল করতে ব্যবহার করা হবে বলেও জানানো হয়। সেই মোতাবেক এই হিসেব বেশ কার্যকারী বলেই মনে করছেন অনেকেই। তাঁরা বলছেন, এই ফান্ডের হিসেব নিয়ে একটা অংশ ধোঁয়াশা সৃষ্টির চেষ্টা করলেও, এই হিসেবেই প্রকাশ পাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর এই ফান্ড করোনা এবং দেশের বিপর্যয় মোকাবিলা করতেই ব্যবহার হচ্ছে, যা দেশের জনগণের পক্ষে নিশ্চিতভাবেই সুখকর।


২৮.০৫.২০২০

নয়াদিল্লি