ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় দুই লক্ষের কাছে! মৃত্যুর পরিসংখ্যান স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে ক্রমশ। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে করোনা চিকিৎসায় এখনও পর্যন্ত সঠিক দিশা বিশ্বের কোথাও নেই।
কখনও বা ম্যালেরিয়ার ওষুধ অর্থাৎ HCQS বা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দিয়ে, কখনও বা এডস-এ ব্যবহৃত ওষুধ দিয়ে চলছে চিকিৎসা। তবে এই অবস্থায় বাংলাদেশের একদল চিকিৎসক দাবি করলেন করোনা চিকিৎসায় ইভারমেকটিন- ডক্সিসাইক্লিন নামক কম্বাইন্ড ড্রাগ আশ্চর্যজনক ফল দিচ্ছে। সম্পুর্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন এই ওষুধ ব্যবহারে রুগীরা নাকি মাত্র ৪ দিনেই সুস্থ হয়ে উঠছেন, এমনই দাবি তাঁদের।
এই দাবি সামনে আসার পর ভারতেও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে এই কম্বাইন্ড ওষুধটি করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার করা নিয়ে। ভারতের ওষুধ সংক্রান্ত প্রধান গবেষণা সংস্থা ‘আইসিএমআর’ এর সিনিয়ার সায়েন্টিস্ট নিবেদিতা গুপ্তা, ‘দি প্রিন্ট’কে জানিয়েছেন এই কম্বাইন্ড ওষুধটি নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। তবে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা দরকার। প্রসঙ্গত, ইভারমেকটিন ওষুধটি কিছু পরজীবী সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। অপরদিকে ডক্সসাইক্লিন আদতে একটি এন্টিবায়োটিক।
উল্লেখ্য, ১৯ মে বাংলাদেশের ওই চিকিৎসক দল দাবি করেন তাঁরা ৬০ জন করোনা রুগীর উপর পরীক্ষামূলক ভাবে এই ওষুধ প্রয়োগ করেন এবং পরবর্তীতে ৬০ জনই সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে যান। বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাঃ মহ তারেক আলম এই তথ্য দিয়েছেন সংবাদসংস্থা পিটিআইকে।
অপরদিকে বাংলাদেশের চিকিৎসকরা এই দাবি করলেও ‘আইসিএমআর’ এর বিজ্ঞানীরা বলেন, ল্যাবে এই ওষুধটি ভালো ফল করলেও করোনা চিকিৎসায় মানব শরীরে এর কার্যকারিতা নিয়ে সেভাবে কোনও তথ্য নেই। ভারতে কোনও ওষুধ ব্যবহারের পূর্বে তা নানাভাবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হয়। তবেই মেলে ছাড়পত্র। এই ওষুধটি নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন ল্যাবে ট্রায়াল দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। চিকিৎসক মহলের আশা খুব শীঘ্রই করোনা চিকিৎসায় এই ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। আখেরে লাভ হবে রুগীদেরই।
অনেকেই বলছেন, বিন্দু বিন্দু মিলেই তৈরি হয় সিন্ধু! এবার সমস্ত বড় বড় দেশকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশের চমৎকারই, হারিয়ে দেবে কি করোনাকে? এমনই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বিশ্বে।
০১.০৬.২০২০
কলকাতা
রিপোর্ট: স্বাতী সেনাপতি
তথ্যসূত্র: দ্য প্রিন্ট