সোনিয়ার চিঠিই কি আরও ‘অশনিসংকেত’ হবে গণমাধ্যমের ভবিষ্যতে? প্রশ্ন তুলে সরব রেডিও অপারেটরদের সংগঠন।

নয়াদিল্লি : ‘লক্ ডাউনে’র দিন আরও বাড়বে কিনা? তা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত সব দলই। অনেক রাজ্য আগেভাগেই দাবি করে ফেলেছে, ‘লক্ ডাউনে’র মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী এই আবহেই বৈঠক করেছেন বুধবার। বিরোধী দলের সাংসদদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে বসেছেন তিনি। দিন বৃদ্ধি নিয়ে ইঙ্গিত এসেছে তাঁর দিক থেকে। কিন্তু তার আগে থেকেই, বিরোধী-মন রাখতে তৎপর ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। কয়েকদিন আগেই, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, এইচডি দেবেগৌড়া সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ হয় তাঁর। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

এই কথোপকথনের পরেই, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, মঙ্গলবার দেশের প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি লেখেন। যে চিঠিতে পাঁচটি বিষয়ের কথা বলেন তিনি। সরকারের সামগ্রিক ব্যয় কমানোর উপায় জানান ওই চিঠির মাধ্যমে।

বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্র জানা গিয়েছে, ওই চিঠির প্রথম উপদেশই ছিলো, সরকার আগামী দু’বছর যেন, সবরকম বিজ্ঞাপন দেওয়া থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখেন। সোনিয়া গান্ধীর মতে, প্রতি বছর সরকার ১২৫০ কোটি টাকা শুধু, বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যয় করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। তাঁর মতে, এই উপদেশ সরকার মানলে দেশের অর্থনীতির উপর সুপ্রভাব পড়বে এবং সঙ্গে সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবিলায়ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

এরপরেই বিতর্ক শুরু হয়। সরকারি বিজ্ঞাপনে বিপুল অর্থ আসে গণমাধ্যমে। যা বন্ধ হলে, বিপাকে পড়বে বহু গণমাধ্যম। এইরকম একটা সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার মাঝেই, ‘দ্যা অ্যাসোসিয়েশন অফ রেডিও অপারেটরস্ অফ্ ইন্ডিয়া’ বা এআরওআই, সোনিয়া গান্ধীর এই প্রস্তাবের কঠোর বিরোধিতা করে এবং একই সাথে জানায় যে, এই সিদ্ধান্তের ফলে আঞ্চলিক রেডিও ও এফএম চ্যানেলগুলির অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত কিছুবছরে এমনিতেই দেশের অধিকাংশ রেডিও চ্যানেলকে প্রায় ২০% কম

‘ডি-গ্রোথে’র সম্মুখীন হতে হয়েছে। তারপরে সাম্প্রতিককালে, প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষতির মুখ দেখছে রেডিও শিল্প। যা এই লক্ ডাউনের ফল বলেই মনে করা হচ্ছে।

ওই রেডিও সংগঠন আরও জানায়, তাঁরা পুরো দেশের ৩৮০ টি বেসরকারি এফএম চ্যানেলের সহযোগিতায়, সমানভাবে, প্রতিনিয়ত কোভিড-১৯ এর মোকাবিলায় সরকারকে সহযোগিতা করে চলেছে। তাই, কংগ্রেস সভাপতি যেন আর‌ও একবার এই উপদেশকে পুনর্বিচার করে দেখেন, এই আর্জি জানায় ওই বেসরকারি এই সংস্থা।

রিপোর্ট: ঋতভাষ সাহা

০৯.০৪.২০

এডিটেড