সাংসদ-মন্ত্রীদের ৩০ শতাংশ বেতন একবছর ধরে যাবে, করোনা মোকাবিলায়। দু’বছর স্থগিত এমপি তহবিলও: কেন্দ্র

Image

নয়াদিল্লি: সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই ভিডিও কনফারেন্সে এর বৈঠকেই নেওয়া হল ‘ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্ত। যা এদেশে কোনও পরিস্থিতিতেই এভাবে প্রয়োগ হয়নি। দেশের অর্থনীতির খুব একটা সমস্যা হবে, এমন আশঙ্কা অনেকক্ষেত্রেই না থাকলেও, আগেভাগেই ‘কঠিন’ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল কেন্দ্রের সরকার। আগামী একবছরের জন্য, মূল বেতন থেকে ৩০ শতাংশ বেতন কাটা হবে সাংসদদের। শুধু শাসক দল না, সমস্ত বিরোধী, নির্দল, অর্থাৎ রাজ্যসভার ২৪৫ জন, লোকসভার ৫৪৩ জন সাংসদের মূল বেতনের ৩০ শতাংশ ঢুকবে ‘করোনা’ প্রভাবে, উদ্ভুত সামগ্রিক পরিস্থিতি সামলাতে‌।

শুধু সাংসদরা নন, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সমস্ত সদস্য, এমনকি এই আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন,দেশের রাষ্ট্রপতি এবং সমস্ত রাজ্যের রাজ্যপালরাও। একবছর ধরে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, যা ইতিমধ্যেই, এই মাসের ১ তারিখ থেকে কার্যকর

করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, যে ২০২০-২১ অর্থবছরের এই অর্থের মোট পরিমাণ দাঁড়াতে পারে আনুমানিক প্রায় ৭ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ! অর্থাৎ মূল বেতন থেকে মাত্র ৩০ শতাংশ নেওয়া হলে, সেই অর্থের পরিমাণ একবছরের হবে প্রায় ৭ হাজার ৯০০ কোটি টাকা! যা এই পরিস্থিতির মোকাবিলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে বলেই জানা গিয়েছে।

এছাড়া এই বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাংসদের এলাকার উন্নয়নের জন্য (MP LADs) বছরে যে ৫ কোটি টাকা করে প্রত্যেক সাংসদকে দেওয়া হয়, সেই অর্থ আগামী ২ টি অর্থবছরের (২০২০-২২)-র জন্য স্থগিত করা হবে। যে অর্থ, করোনা পরিস্থিতির কারণে, প্রয়োজনে দেশের সমস্ত এলাকাতেই খরচ করা হবে। অর্থাৎ সাংসদরা উন্নয়ন তহবিলে যেটা পেতেন, সেটাও পরপর দুবার স্থগিত করা হয়েছে। সরকারের তরফে বৈঠকের পড়ে, এই সিদ্ধান্তের পর, কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেল সংবাদসংস্থা এএনআই-কে জানান, ”একজন লোকসভার সদস্য হিসেবে আমি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।”

আদতে দেশের এইরকম অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আসছে কিনা? কী হতে চলেছে, তা নিয়ে প্রায় সকলেই সন্দিহান। এই সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক বললেও, অনেকেই এখনও ধোঁয়াশায়। আদেও

এই ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’ কেন নিল সরকার, তা নিয়েও ভাবাচ্ছে অনেককেই।

তবে এই মাত্র ৩০ শতাংশ বেতনের অর্থ কাটা হলে, তা দেশের ‘করোনা’ পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজে লাগলে, খুব সমস্যা কোনোভাবেই হবে না মাননীয় সাংসদদের। তার কারণ হিসেবে একাংশের

ব্যাখ্যা, একেকজন সাংসদ শুধুমাত্র মূল বেতন

পান, প্রায় ১ লক্ষ। অর্থাৎ এই অর্থের ৩০ শতাংশ একবছর কাটা হলেও তাঁরা হাতে পাবেন ৭০ হাজার টাকা! আরও আছে, অফিস সম্পর্কিত বিভিন্ন কারণে ৬০ হাজার। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন পরিষেবার জন্য সুযোগ। বিভিন্নরকম ভাতা। সবমিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। এখান থেকে ৩০ হাজার টাকা, একবছরের জন্য যাবে ওই নির্দিষ্ট কাজে। নির্দিষ্ট ফান্ডে।

শুধু সাংসদ, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী নন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর, সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতিও তাঁদের সাম্মানিক থেকে ওই পরিমাণ অর্থ দেবেন। প্রসঙ্গত, দেশের রাষ্ট্রপতি সাম্মানিক হিসেবে মাসে পান, ৫ লক্ষ টাকা। উপরাষ্ট্রপতি পান ৪ লক্ষ। এবং রাজ্যের রাজ্যপালরা পান মাসিক ৩.৫ লক্ষ টাকা।

স্বাভাবিভাবেই এই সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক’ বলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য প্রকাশ জাভড়েকর। ‘ঘর থেকেই দেশ সেবা’র কথাও বলেছেন তিনি।

নয়াদিল্লি

০৬.০৪.২০

ছবি: ANI

ANI, THE PRINT