সতর্কতা নেই! ‘ফাঁকি’তেই মত্ত একাংশের জনতা! বাইকে, গাড়িতে অযথা লাগছে, জরুরি পরিসেবার স্টিকার।

মালদহ: দেশজুড়ে আক্রান্ত বাড়ছে রোজ। কিন্তু হুঁশ? সেখানেই যেন নৈব নৈব চ! হ্যাঁ, নিজের ভালো হবে, তা ভেবে না, লকডাউনের মধ্যে পুলিশের চোখে ফাঁকি দিতে মোটরবাইক , চারচাকার গাড়ির সামনে কেউ লিখছেন প্রেস, কেউ লিখছেন মেডিকেল স্টাফ, আবার কেউ লিখছেন গভর্মেন্ট সার্ভিস, মেডিকেল এজেন্ট। একের পর এক গাড়িতে সাদা কাগজে সাঁটা এরকমই জরুরী পরিষেবা সত্যতা যাচাই করতে ময়দানে নামলো মালদা পুলিশ।  অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতি তদারকি করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হলো পুলিশের।

মালদহে পুলিশের নজরদারি।

শুক্রবার মালদা শহরের প্রাণকেন্দ্র ফোয়াড়া মোড়ে এলাকায় একের পর এক ঘটনা পুলিশের নজরে আসে। পুরাতন মালদার এক ছাপাখানার মালিক নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রেস লেখা গাড়ি নিয়ে মালদা শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বিষয়টি নজরে আসতে পুলিশ ওই ছাপাখানার মালিকের গাড়ি আটকায় । জিজ্ঞাসাবাদে আসল ঘটনা ধরা পড়ে।  মুহূর্তের নিজের মধ্যেই ভুল স্বীকার করে ওই ছাপাখানার মালিক ক্ষমা চান পুলিশের সামনেই ।

একই রকম ভাবে কেউ লিখছেন মেডিকেল স্টাফ, আবার কেউ লিখছেন গভর্মেন্ট স্টাপ। বিশেষ করে মোটরবাইক গুলির সামনে সাদা কাগজে বড় বড় হরফে এই লেখি লকডাউন অমান্য করে দেদার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বহু মানুষ । এমনই অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে অভিযান চালায় মালদা ট্রাফিক পুলিশ। একাধিক মোটরবাইক , চারচাকা গাড়ি থেকে সাদা কাগজের লেখা ছিড়ে ফেলা হয়। জিজ্ঞেস করা হয় সেই সব গাড়ির মালিকদের। কেন এরকম ভাবে লিখে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। পুলিশ এবং প্রশাসন থেকে এই ধরনের বার্তা গাড়িতে অনুমতি রয়েছে কিনা তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি সিংহভাগ মোটরবাইক ও চার চাকার চালকেরা। তবে আইডেন্টিটি কার্ড অথবা কোন পরিচয় পত্র কাজের যদি থাকে। সে ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে। কিন্তু এরকমভাবে জরুরী পরিষেবার কথা কাগজে লিখে গাড়িতে  সেটে  পুলিশকে বিভ্রান্তি করার জন্য আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

এদিন ফোয়ারা মোড়  এলাকায় স্কুটি নিয়ে যাওয়া এক মহিলার গাড়ি আটকায় পুলিশ। বাইকের সামনে বড় বড় হরফে একটি সংস্থার কাগজে সাঁটা ছিল। ওই মহিলার কাছে পরিচয় পত্রও ছিল ।তখনই পুলিশ বিষয়টি অবগত করে, পরিচয় পত্র থাকলেই যথেষ্ট ।গাড়ির সামনে এভাবে সাদা কাগজে লেখাটা জরুরী নয়। এজন্য আলাদা করে পুলিশ ও প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন হয়। ওই মহিলা নিজের ভুল বুঝতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে ছিঁড়ে ফেলেন গাড়ির বাইকের সামনে লেখা কাগজটি।

ঠিক একই রকম ভাবে এদিন শহরের অসংখ্য মোটরবাইক, চার চাকার গাড়িরতে লেখা অবাঞ্চিত এই পোস্টারগুলি ছিঁড়ে ফেলা হয়।

মালদা জেলা ট্রাফিক পুলিশের ওসি তরুণ সাহা জানিয়েছেন, কর্ম ক্ষেত্রে যাদের প্রয়োজনীয়তা আছে , তারা অবশ্যই কাজ করবেন । কিন্তু এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিচয় পত্র তাদেরকে দেখাতে হবে। পুলিশ ও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া যদি কেউ গাড়িতে অবাঞ্ছিত ভাবে জরুরি পরিষেবার নামে চলাচল করে, সে ক্ষেত্রে ধরপাকড় করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট কাজের জরুরী পরিষেবা পরিচয় পত্র না দেখাতে পারলে প্রয়োজনে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৭.০৪.২০২০

মালদহ

PB

কভার ফটো: প্রতীকী