মালদা: এই সংকট অর্থাৎ লকডাউন মিটলে ঘরে ঢুকবে সোনার ফসল, ঘুচবে খাদ্য সঙ্কট, এমনই আশার আলো দেখছেন উত্তর মালদার চাষিরা। টানা লকডাউনের জেরে কর্মহীন বহু মানুষ। কিন্তু কৃষি ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে রাজ্য সরকার। তার জেরে জমিতে নেমে জোরদার কাজ চালাচ্ছে ধান চাষীরা। রিকশা, ভ্যানচালক দিনমজুর যাদের হাতে কাজ নেই। তারাও এখন কৃষিকাজে অন্যের জমিতে চাষী হিসাবে কাজ করছেন যাতে দুবেলা অন্নের সংস্থান হয়। আর তার জেরেই এখন উত্তর মালদা জুড়ে ধানের জমি শুধু সবুজে সবুজ।
সংশ্লিষ্ট এলাকার জমির মালিকেরা বলছেন, জমির জঙ্গল পরিষ্কার,পরিচর্যা ইত্যাদি চাষের কাজে বহু শ্রমিক সহজেই পাওয়া গেছে কাজের জন্য। যা অন্যবারের তুলনামূলক অনেক কম শ্রমিক পাওয়া যেত। এমনকি কৃষক নিজেই শ্রমিক হয়ে যেত। তা এবার লকডাউনে অন্যরুপ ধারণ করল।
তাই এবার লকডাউনের মধ্যে ব্যবসা বানিজ্য ও রাজ্যের অর্থনৈতিক ব্য্যবস্থায় ক্ষতি হলেও, মুখে হাসি ফুটবে ধান চাষিদের বলে আশঙ্কা।
উত্তর মালদায় বোরো ধানের উচ্চ ফলনের সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে এবছর। মূলত উত্তর মালদার চাচোল ১,২, হরিশ্চন্দ্রপুর ১,২, রতুয়া ১,২, গাজোল , হবিবপুর, পুরাতন মালদা ,বামনগোলা ব্লক গুলি অবস্থিত । তবুও এবার বোরো চাষকে সৌভাগ্য হিসাবে মনে করছেন মালদা জেলার চাঁচল মহকুমার ধান চাষিরা।
উত্তর মালদার ১০ টি ব্লক এলাকার প্রতিটি মাঠের বুকে এখন সবুজের সমারহ। দিগন্তজুড়ে যে দিকে তাকায় শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজের সমারোহে চোখ জুড়িয়ে যায় লকডাউনে।
বোরো ধানের ব্যাপক ফলনের আশায় কৃষকের মুখে এখন যেন হাসি ফুটেছে।
ধান চাষীদের বক্তব্য, বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারে বড় ধোনের ভালোমতো উৎপাদন হবে।
চাঁচলের কলিগ্রামের চাষি ইমতিয়াজ শেখ, সাইদুল শেখ, ইমারত শেখদের বক্তব্য , চাঁচল মহকুমার প্রত্যন্ত গ্রামের চাষীরা বর্তমানে লকডাউনের মধ্যে হাড়ভাঙা খাটুনি করে ধানের চাষ ধান চাষ করে চলেছেন। লকডাউন উঠলেই সুষ্ঠভাবে যেন মাঠের ফসল ঘরে তুলতে পারেন সেই আশায় করছেন সকল চাষিরা।
চাচোলের মহানন্দাপুর গ্রামের ধান চাষী রফিকুল ইসলাম , সাদ্দাম হোসেন বলেন, কয়েক দফায় ঝড় শিলাবৃষ্টি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ধানের জমিতে তুলনামূলক ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয় নি। আবহাওয়া ঠিক থাকলে দু-সপ্তাহ পরে ধান তোলা সম্ভব হবে।
তবে এবার লকডাউনে সাধারণ মানুষের কর্মহীনতায় ধান চাষের ব্যাপক পরিচর্যা হয়েছে বলে খবর। তাই লকডাউনের পরে ঘরে লক্ষী প্রবেশ করতেই খাদ্য সঙ্কট ঘুচবে গৃহস্থ ও সাধারণদের।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদায় বোরো ধানের ব্যাপক ফলন হয়েছে। রাজ্য সরকার কৃষি ক্ষেত্রে অনেকটাই ছাড় দিয়েছে। নিয়ম করে ২৫ শতাংশ মানুষ কৃষিক্ষেত্রে মাঠে নেমে কাজ করতে পারবে। সমদূরত্ব বজায় রেখেই যাতে মানুষ চাষবাস করেন সেকথাও রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে। আমরাও কৃষকদের সব রকম ভাবে সহযোগিতা করছি। তবে এবার বিঘা প্রতি ১৬ মণ ধান ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকদের এবার ধান উৎপাদনে ক্ষেত্রে অনেকটাই লাভ হবে।