মুক্তির পথ বুদ্ধ, জীবনের প্রাধান্য তাঁর বাণী, করোনা আবহে বুদ্ধ পূর্ণিমায় ‘শরণ’ নরেন্দ্র মোদীর।

করোনা সংকটে দেশ। প্রতিমুহূর্তে আশঙ্কা বাড়ছে। অর্থনীতি থেকে স্বাস্থ্য, দোলাচলে সব। কিন্তু এর মধ্যেই, বিশ্বের শান্তির এক অন্যতম প্রতীকের আবির্ভাব দিবস আজ। সেইদিন উপলক্ষ্যে ভাষণ দিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রথমত আজ, বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জনগনকে বুদ্ধপূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান। এই প্রেক্ষিতে তুলে ধরেন সবটা।

যেহেতু করোনা ভাইরাসের কারণে সভা অনুষ্ঠিত করা সম্ভব না, তাই প্রযুক্তিকে মাধ্যম করে তিনি ভগবান বুদ্ধ এর কিছু বাণী নিয়ে ব্যাখ্যা করেন। ২০১৫ এবং ২০১৭ তে সভাতে উপস্থিত থাকলেও এবার তিনি জানান, বুদ্ধ-র মতে, ধর্ম মানুষের মন! অর্থাৎ যদি মন সুস্থ থাকে তাহলে যে কোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব।

লকডাউন এর জন্য বুদ্ধ পূর্ণিমার সভা স্থগিত করা হয়েছে। সবাই এখন একত্রিত হয়ে লড়ছে এর বিরুদ্ধে। লুম্বিনী, বোধগয়া, সারনাথ, শ্রীলঙ্কার অনুরাধা স্তূপ প্রভৃতি জায়গার বৌদ্ধ সংঘগুলো প্রশংসা করার মত কাজ করছে। জমায়েত না হয়

এবং অনলাইন পুজো অর্চনা যাতে করা যায়, তার অভিনব উদ্যোগ, অনেকেই নিয়েছেন, মানুষের সুস্থতা কামনায়। যা বিস্তর প্রশংসার দাবি রাখে, বলে মনে করেন তিনি।

ডাক্তার এবং সর্বক্ষণ বাইরে কাজ করে যাঁরা আমাদের সুস্থতা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের জন্য এই পূজা অর্চনা করে সত্যিই এক অদ্ভুত মানবতার পরিচয় দিচ্ছে। যেহেতু ভগবান বুদ্ধ সংস্কৃতি এবং পরম্পরাকে বৃদ্ধি করেছে তাই মোদী বুদ্ধের কথা মাথায় রেখে বলেন, “বুদ্ধ কোনও একটি পরিস্থিতিতে সীমাবদ্ধ নন। তাঁর বিস্তার বেশ, তাই সময় বদলে গেলেও বুদ্ধের বাণী আজও আমাদের জীবনে প্রাধান্য যোগাচ্ছে।”

গৌতম বুদ্ধ এমন একজন মানুষ যিনি প্রত্যেক মানুষের জীবনের মনুষ্যত্ব-এ বিরাজমান। তিনি ত্যাগ ও সমপর্নের সীমা, সাহায্য এবং নৈতিকতার মানদন্ড, যিনি নিজের সুখের বিনিময়ে সবার ভালো থাকা দেখেছেন, ঠিক সেইরকমই মোদী বলেন, কিছু মানুষ যাঁরা নিজেদের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে অন্যকে সেবা করতে এই সময় এগিয়েছেন, যাঁরা খেতে পাচ্ছেন না তাঁদের জন্য খাবার নিয়ে ছুটেছেন, কখনো রাস্তায় ২৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছেন, যাঁরা বাড়িতে এবং ভারতের বাইরে, তাঁদের আজ কুর্নিশ জানানোর সময়।

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “সময়টা খারাপ হলেও কিভাবে এটা থেকে কাটিয়ে উঠে আসা যায় তা ভগবান বুদ্ধের বাণী থেকে জানা যায়। তাই সবাই হতাশাগ্রস্ত না হয়ে কী করে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় সেই পথই দেখতে হবে। আর সেটাই আমাদের ভাবতে হবে।”

ভগবান বুদ্ধের চার শব্দ – ক্ষমা, প্রেরণা, সুখ দুঃখকে মানার ক্ষমতা এবং যে ঠিক যেইরকম তাঁকে সেরকম ভাবেই কাটাতে হবে, যা প্রত্যেক মুহূর্তে সমস্ত ভারতবাসীর অন্তরে প্রেরণার প্রদীপ জ্বালাচ্ছে। যে বিপদে পড়েছে প্রত্যেকের পাশে থাকা উচিত দাঁড়ানো দরকার সেটাই স্পষ্ট করেছেন। তিনি অবশেষে বলেন যে এই দুরসময় কাটিয়ে উঠতে গেলে নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখে মনুষত্ব কে বাঁচিয়ে চলতে হবে তবেই আমরা এ ব্যাধি থেকে বাঁচতে পারব। ভগবান বুদ্ধের বাণী র প্রতি ভরসা প্রদর্শনও করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

______________________________________

০৭.০৫.২০২০

নয়াদিল্লি
শিল্পা চ্যাটার্জী