নয়াদিল্লি: পরপর তিনবার। হ্যাট্রিক করেই ফেললেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল! ফের দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন ‘আম আদমি পার্টি’র মুখ।
এই জয়ের পরই, ‘ঘৃণার রাজনীতির হার’ হয়েছে বলে সরব হলেন মোদী বিরোধিতার অন্যতম মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তেজস্বী যাদবরা।
ওখলা বিধানসভা, শাহিনবাগ-যে কেন্দ্রের অন্দরে, সেখান থেকে এগিয়ে আম আদমি পার্টি। আবার মণীশ শিশোদিয়া মাত্র এক হাজারের কিছু বেশি ভোটে এগিয়ে বিজেপির থেকেও কার্যত হাসিল করলেন জয়। এইরকম টানাপোড়েন থাকলেও, মঙ্গলবার বিকেলে কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় দিল্লির মসনদে ফের বিপুল সংখ্যক আসন নিয়ে ক্ষমতায় বসতে চলেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ওই রাজ্যের বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারি’র ‘কল্পনাময়’ ভাষণের পরও, প্রায় চূড়ান্ত হয়ে যায় আম আদমি পার্টির হ্যাট্রিক। যারা বিকেল ৪ টে অবধি এগিয়ে যায় প্রায় ৬৩ আসনে, যেখানে বিজেপি এগিয়ে মাত্র যায় ৭ টি আসনে। কংগ্রেসের ঝুলি থাকে শূন্য! ত্রিনগরের মতো খুুব কম কয়েকটি আসন ছাড়া, বিজেপির অস্তিত্ব প্রায় বিপন্ন। গোটা দিল্লির পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ, সবদিকেই জয় জয়াকার ঝাড়ুর।
অবশেষে অরবিন্দের দলের হতে আসে ৬২ আসন, আর বিজেপির হাতে যায় মাত্র ৮ টি আসন। যদিও এই বিপুল জয়ের পর, অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে বিজেপি সভাপতি জেপি নাদ্দা। শুভেচ্ছা জানান বিরোধী প্রায় সব দল থেকে শুরু করে বলিউড-টলিউডের তারকারাও।
কার্যত ‘ঝাড়়ুর এক বাড়িতে’ই নিমেষেই উড়ে গেল ২০১৯ এর বিজেপি।
একদা, ‘ক্লিন সুইপ’ পাওয়া নরেন্দ্র মোদীর দল, ২০২০ এর বিধানসভাতে এসে ফের মুখ থুবড়ে পড়ল। ২০১৪ এর পর, ২০১৫ তেও প্রায় একই ঘটনা ঘটে। এবারও, সমস্ত হুংকার, জল্পনা, কল্পনাকে মিথ্যে করে, ‘এক্সিট পোলে’র কথায় প্রায় সত্যি করে ফলাফল প্রকাশ হল। ধোপে টিকল না, ইভিএমের ইস্যুও।
এদিন ‘ট্রেন্ড’ দেখার পরই, আপের দিল্লির দফতরে শুরু হয় উৎসব। আপের নেতা সঞ্জয় সিং জানান, দেশের ছেলের, দিল্লির ছেলের জিত হিয়েছে, আতংকবাদী বলা ওদের না। দিল্লিবাসির প্রীতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, আমি আপনাদের ভালোবাসি বলেন কেজরিওয়াল নিজে। তাৎপর্য পূর্ণভাবে ট্যুইট করেন, কেজরিওয়ালের এবারের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। তিনি লেখেন, ভারত তার আত্মার কথা শুনেছে।
এদিকে এই জয়ের পরই, দেশজুড়ে একযোগে সরব হন মমতা থেকে অখিলেশরা। দেশে এই ফলের প্রভাব পড়বে, বিজেপির জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে এই রায়, এমনই মত তাঁদের। কেজরিওয়ালের শপথ অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ, তেজস্বী যাদব রা। এদিকে বিকেল গড়াতেই তুলনায় বিমর্ষ হয়ে পরে বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। বারবার রাজ্য গুলোতে বিজেপির পরাজয়, তা নিয়ে চিন্তিত বিজেপির একটি অংশ। যদিও এই পরাজয়ে যে, এনআরসি এবং সিএএ-র প্রভাব পড়তে পারে, তা মানতে নারাজ আবার কেউ কেউ। এখন দেখার সামনে বিহার, তারপর বাংলার নির্বাচন নিয়ে কী নতুন কৌশল নেয় বিজেপি।
ছবি সৌজন্যে: টুইটার।
Last Update: 11 p.m, 11/02/2020
by Ramen Das
33 views