বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যেই ‘লক্ ডাউন’! এর পর কে? শুরু প্রবল জল্পনা।

একটা একটা করে দিন অতিক্রান্ত হচ্ছে, আর আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তরতরিয়ে। উত্তর থেকে দক্ষিণ, সমগ্র ভারতজুড়ে খবর আসছে কেউ না কেউ আক্রান্ত হওয়ার। ৩ জনের মৃত্যুর পর, এরকম কোনও খবর না এলেও আক্রান্তের সংখ্যা কমছে না। এমত পরিস্থিতিতে, কীভাবে এর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাই নিয়েই বেশ চিন্তায় স্বাস্থ্যমহল। দফায় দফায় বৈঠক। বিভিন্ন রাজ্যে, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে র মতো বিশেষ উদ্যোগ। সামগ্রিকভাবে, গোটা বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে কোভীদ-১৯ প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে অনবরত। কিন্তু তারপরেও গত ৪৭ দিনে ভারতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫০ এর বেশি। সর্বাধিক আক্রান্ত মহারাষ্ট্রে। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৬৭! ইতিমধ্যেই আশঙ্কার খবর এসেছে বিদেশ থেকেও।শুধুমাত্র ইরানেই এই মারণ ভাইরাসে, বুধবার পর্যন্ত আক্রান্ত ২৫৫ জন ভারতীয়। বিভিন্ন দেশের অবস্থানে, সবমিলিয়ে সেই সংখ্যা কমপক্ষে ২৭০।

এভাবেই বেড়ে চলেছে করোনার প্রকোপ। চিনের হুবেইন প্রদেশ ছাড়িয়ে এখন নতুন এপিসেন্টার হয়েছে ইউরোপ মহাদেশ। যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা, হার মানিয়েছে গোটা এশিয়া মহাদেশের মৃত্যুকেও। সাড়ে সাত হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে সেখানে। সর্বাধিক শোচনীয় অবস্থা ইতালির। তার পরেই আছে স্পেন। আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স… বাকি নেই প্রায় কেউ।

এই অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন বিশ্বের অর্থনীতি। বন্ধ কারখানা, বন্ধ অফিস। উৎপাদন শিল্প, অনেকদেশেই একেবারে বন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই অর্থনীতির অবননমন হচ্ছে ক্রমশ। পড়ছে শেয়ার সূচক। বিভিন্ন দেশের মুদ্রার মূল্য। বিশ্বের আমদানি রফতানি শিল্পেও পড়েছে ভাটা। একের পর এক দেশে ঘাটতি শুরু হয়েছে মূলধনের।

যদিও, এই রোগের প্রকোপ, এই শত্রুর নিধনে বহু দেশ ঘোষণা করেছে ‘লক্ ডাউনে’র। অর্থাৎ খুব অত্যবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া বন্ধ করা হয়েছে সব। গৃহবন্দি মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে সহযোগিতার। ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন -এর মত দেশ ঘোষণা করেছে, ‘লক্ ডাউনে’র। সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তাঁর দেশে, ‘লক্ ডাউন’ ঘোষণা করেন। তাঁর আবেগঘন বক্তৃতা ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র বিশ্বে।

এদিকে ভারত, আমেরিকার মতো দেশ, জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক ঘোষণা নিয়েই কাজ করছে। মহামারী ঠেকাতে কাজ করছে এই দেশগুলো। কিন্তু এইভাবে কাজ করেই করোনা ভাইরাস, প্রতিরোধ করা যাবে কিনা? এই ভাইরাসের মতো বিপজ্জনক মহামারী আটকাবে কিনা, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তাহলে কি অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে জেনেও, অনেক দেশের মতোই ভারতেও ঘোষণা হবে লক্ ডাউনের? এমনও জল্পনা কিন্তু শুরু হয়েছে। দাবি, ইতিমধ্যেই অর্থনীতির ঝিমুনির মধ্যেই যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে ঘুরে দাঁড়াতে কমপক্ষে ১ বছর লাগবে। অর্থনীতিবিদদের একাংশের এমন আশঙ্কার মধ্যেও, এই মহামারী মোকাবিলায় ভারতেও ঘোষণা করা হবে ‘লক্ ডাউন’?

যদিও, এইরকম পরিস্থিতি আদেও এসেছে বলে মনে করেন না অনেকেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আজ রাত ৮ টায়, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের কথা ঘোষণা হতেই এমন জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে নেটিজেনদের একাংশের মধ্যে। তাহলে এদেশেও এমনকিছু বলতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী?

এই জল্পনা শুরু হলেও, তা যে একেবারেই শুধুই কল্পনা, এমনই বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তাঁদের দাবি, এসব প্রচার মাত্র, ভারতের মতো দেশে এখনও করোনা নিয়ে এমন কোনও পরিস্থিতি নেই যে লক্ ডাউন করতে হবে। তবে, বাধ্যতামূলকভাবে বেসরকারি কোম্পানি বা অফিস বন্ধ রাখতে বলা হলে, সেটা খুব অবাক করবে না বলেই মত তাঁদের।