কিরণ দত্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন? দেখে নেওয়ার ‘হুমকি ফোন’ সাংবাদিককে।

কিরণ দত্তের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ করা হল? কেন আপনি করলেন? এবার এই প্রশ্ন তুলে, ওই সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক রাজেশ সাহাকে, ‘হুমকি ফোন’ করার অভিযোগ উঠল এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই সাংবাদিক জানাচ্ছেন, ‘দেখে নেওয়ার হুমকি’ দেন ওই ব্যক্তি। কল রেকর্ড করেন তিনি। যদিও, তারপরেই, এই ‘হুমকি’র কথা, জানানো হয়েছে পুলিশে।

প্রসঙ্গত, আজ সকালে আমরাই প্রথম জানাই, কিরণ দত্তের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে একটি বাংলা সংবাদ প্রতিষ্ঠান। যাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাও রুজু করে পুলিশ।

প্রশ্ন ওঠে, সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে রাতারাতি জনপ্রিয়তা অর্জনের প্রবণতা নিয়েও। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আজকাল বেশ দেখা যায় এই বিষয়টি। যা, বংগাইয়ের অর্থাৎ কিরণ দত্তের মধ্যেও আছে কিনা? তা নিয়েও উঠেছে ফের প্রশ্ন। যার অবতারণা এই ঘটনাটি! যদিও, বিপরীতভাবে, কিরণের জন্য ওই চা কাকুর ব্যাংক একাউন্টে টাকা উপচে পড়ছে, এমন দাবিও ওঠে।

উল্লেখ্য, ওই সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি,

ধৃতাংশু দাঁ- র অভিযোগ, ‘গত ৫ এপ্রিল তাঁদের সংবাদ পোর্টালে ‘মিম বদলে দিয়েছে চা কাকুর জীবন, রোজ কুকথা শুনেই শুরু হয় দিন,’ এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।রীতিমত সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ট্রেন্ডে চলা ‘চা কাকু’ অর্থাৎ যাদবপুরের মৃদুল দেব সম্পর্কে এই প্রতিবেদন, মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে। নিমেষেই শেয়ারের ঝড় ওঠে। অভিযোগ, তারপর ওই প্রতিবেদন-কেন্দ্রিক পোস্টে, জনপ্রিয় এই ইউটিউবার কুরুচিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। ৭ এপ্রিল দায়ের করা ওই অভিযোগপত্রে ধৃতাংশু দাঁ লিখেছেন, ‘মিথ্যা, উস্কানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর ওই মন্তব্যে সংস্থার মহিলা সাংবাদিক সুচিত্রা রায় চৌধুরীকেও কুরুচিকর আক্রমন করা হয়েছে।’ তাঁর আরও দাবি, যিনি ওই মন্তব্য করেছেন, ‘তিনি পরিচিত হওয়ায়, মুহূর্তে ওই মন্তব্য ভাইরাল হয়েছে, যার ফলস্বরূপ আক্রমণের স্বীকার হচ্ছে ওই সংবাদ প্রতিষ্ঠান এবং তাঁদের সাংবাদিকরা।’

ওই অভিযোগে জানানো হয়েছে, কিরণ দত্তের মন্তব্যের ফলে ওই সংবাদ প্রতিষ্ঠানের মানহানি, বিশ্বাসযোগ্যতা একাংশের দর্শকের কাছে, প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে, এমনকি বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে একে কেন্দ্র করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের কাছে, কিরণ দত্তের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবিও জানানো হয়েছে তাঁদের তরফে।

যদিও, ইউটিউবার কিরণ দত্তের সঙ্গে আমাদের তরফে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও, এই বিষয়ে তাঁর কোনও উত্তর বা মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, প্রধামন্ত্রীর ডাকে ‘জনতা কারফিউ’য়ের দিন, একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেন এক যুবতী। যেখানে দেখা যায়, যাদবপুরের একটি জায়গায়, এক চায়ের দোকানে ভিড় করে রয়েছেন কিছু মানুষ। যাঁদের ওই যুবতী বলছেন, কারফিউ এর দিন তাঁরা রাস্তায় কেন? সেখানে মৃদুল দেব নামে এক প্রৌঢ় বলেন, ‘আমরা চা খাবো না?’ তাঁর সেই কথাকে কেন্দ্র করে, একাধিক ট্রোল, মিম, ভিডিও, গান তৈরি হয়। বিভিন্ন রকমের উপহাসের উপকরণ করে ফেলা হয় তাঁকে। আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায় অত্যন্ত কষ্টের কাজ করেন ওই প্রৌঢ়। তারপর ওই বাংলা খবরের পোর্টালের সাংবাদিক, রাজেশ সাহা একটি প্রতিবেদন করেন, যেখানে ওই ভাইরাল ‘চা কাকু’ অর্থাৎ মৃদুল বাবুর জীবনের অন্যদিক তুলে ধরা হয়। তাঁর পরিবার, অসুস্থ বোন, বেকার ছেলে সবটা বলা হয়। বহু মানুষ সহানুভূতিও প্রদান করেন। অনেকেই তারপর সাহায্যের হাত বাড়ান মৃদুল বাবুর জন্য।

এই সম্পর্কিত প্রতিবেদনের পোস্টেই ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে, কিরণ দত্তের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিনি ওই মন্তব্যে লেখেন, ”আরে সেই জঘন্য রিপোর্টারটা, অঙ্কুশকে তেল মারা সেই মহিলা, কথা শুনে বুঝছো না, কত লেভেলের মানুষকে টন্ট করতে পারে? … ভিউজ বাড়ানোর জন্য আল** বলে গেল ফুটেজখোর মহিলা সব জায়গায় একে ওকে টন্ট মেরে বেড়াবে…”। অভিযোগ, তিনি ফের আরেকটি মন্তব্যের মাধ্যমে বলেন, ”শিখিয়ে পড়িয়ে বিক্রি না করতে মানুষের কাছে… কোনও অসহায় মানুষকে ব্যবহার করে নিউজ করার কথা বলছি।”

সম্প্রতি, কিরণের তরফে, রাজ্যসরকারের করোনা তহবিলে ১ লক্ষ টাকা অনুদানের পর, ভিডিও তৈরি করা হয়, বহুমানুষ সমর্থন জানান তখন, কিন্তু এক মহিলা সাংবাদিক সম্পর্কে এই ধরণের মন্তব্য ভালোভাবে নেননি বহু মানুষ। সমালোচনা শুরু হয় তাঁকে নিয়েও। তারপর, যে মহিলা, ‘জনতা কারফিউ’-এর দিন ওই ভিডিও করেছিলেন, তাঁকে নিয়েও ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও পোস্ট করেন কিরণ। এই পরিপ্রেক্ষিতের মধ্যেই কিরণ দত্ত অর্থাৎ ইউটিউবের বংগাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন ওই সংবাদসংস্থার মালিক। যা এযাবৎ কালে দাঁড়িয়ে, যেকোনও বিষয়েই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার করে, যথেচ্ছভাবে যা খুশি বলা বা করা, রোধেও কড়া বার্তা হতে পারে বলেই মত জনতার একাংশের। যা খুশি তা করা যায় না, যা নিয়ন্ত্রনের দিকে পুলিশের নজরের পক্ষেও সওয়াল করেন ওই অংশের জনতা।

যদিও, এই বিতর্ক এবং পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ার বিষয়ে, ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ নেন,কী করবেন? ইউটিউবের কিরণ দত্ত, সেদিকেও তাকিয়ে তাঁর ফ্যানরা।

০৯.০৪.২০২০

কলকাতা

দ্বিতীয় আপডেট: রাত ৮.৫০ মিনিট

Reported by Hritavash Saha

Edited by R.D

www.khoborwalatv.com