কলকাতা: দেশজুড়ে বন্ধের পরিস্থিতি। রাজ্যের পর রাজ্যে বন্ধ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। আক্রান্তের সংখ্যা ভারতে ছাড়িয়েছে ১৫৫ এর বেশি। বাংলায় এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত ১। বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান, প্রায় সবদেশেই মৃত্যুর খবর আসছে দ্রুত। চিনের পর, ইউরোপে এক ধাক্কায় মৃতের সখ্য বেড়েছে। কানাডার মতো দেশেও লকডাউন করা হয়েছে। অর্থনীতির অবস্থা করুণ। এর মধ্যেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার বাতলে দিলেন করোনা ভাইরাস থেকে দূরে থাকার পথ। যা রয়েছে করোনা কথার মধ্যেই! তিনি ট্যুইট করে জানান, ‘সি’ তে- ‘ক্লিন ইউর হ্যান্ড’ অর্থাৎ আপনার হাত পরিষ্কার করুন। ‘ও’- তে ‘অফ্ ফ্রম গ্যাদারিং’ অর্থাৎ ভিড় এড়িয়ে চলুন। ‘আর’-এ ‘রিন্স ইউর হ্যান্ডস উইথ ওয়াটার / স্যানিটাইজার’। হাতে জল অথবা স্যানিটাইজার দিন। ‘ও’-তে ‘ওনলি সিক টু ওয়ার মাস্ক’। অসুস্থ হলে মাস্ক পড়ুন। ‘এন’-এ ‘নো টু হ্যান্ডশেক’। করমর্দনকে না বলুন। ‘এ’-তে ‘অ্যাভয়েড রিউমার্স’ অর্থাৎ গুজব এড়িয়ে চলুন। এভাবেই প্রতিটি অক্ষর এবং তার মধ্যেই ভালো থাকার পথ বললেন তিনি। যদিও এই কথাগুলো আগে থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রকাশিত হয়েছে। তবুও কমিশনারের তরফে এই বার্তা ভালোভাবেই নিচ্ছে জনতার বড় অংশ।
এদিকে, এই পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে ভুল খবর বা ফেক নিউজের বাড়বাড়ন্ত মাথাচাড়া দিচ্ছে। ক্রমশ ‘ফেকে’র যাঁতাকলে পড়ছে জনতা। এমনকি, শিক্ষিত একটা অংশের মধ্যেও এই ফেক খবর বা বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতেই বুধবার কড়া নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে এদিনই ট্যুইট করে কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা বলেন, সত্যতা যাচাই না করে কিছু ছড়াবেন না, এইসবক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশ নজর রাখছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও তিনি বলেন।
এখানে একজন আক্রান্ত অথবা কলা খেলে সারবে, ইন্টারনেট বন্ধের মত ভুয়ো খবরের ছড়াছড়ি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে। ইনবক্স ভরছে একাধিক এই ধরনের খবরে। যা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে জনমানসে। কেউ কেউ তো বিশ্বাস করেও ফেলছেন। গোমূত্র থেকে তুলসী পাতার শরণাপন্ন হতেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন তাঁরা। চিকিৎসকদের পরামর্শে না কান দিয়ে, ফেক নিউজের বাড়বাড়ন্তকেই আমল দিচ্ছেন ওই অংশের জনতা।
কিন্তু এই ফেক নিউজের কবলে পড়ে ক্রমশ বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে প্রশাসন। একাংশ বলছেন, এভাবে ফেক নিউজে মানুষ ডুবতে শুরু করলে, তা সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে। -এটা যে খুব একটা ভুল আশঙ্কা না, তা প্রমাণ করছে বিভিন্ন ঘটনায়। শোনা যাচ্ছে, বিদেশ থেকে ফিরেও অনেকেই নাকি যেতে চাইছেন না ‘কোয়ারেনটাইন’ সেন্টারে। যাঁরা কিন্তু আদতে শিক্ষিত। অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের মা একটি ভিডিও শেয়ার করেন। সম্প্রতি শেয়ার করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বিদেশ থেকে বিমানবন্দরে ফেরা যাত্রীরা ক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ‘আমাদের মেরে ফেলুন’ বলছেন।
এই পরিস্থিতিতে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ এবং পুলিশ কমিশনারের বার্তা, অনেকটাই ফেক নিউজকে রোধ করবে বলেই আশাবাদী সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
১৯.০৩.২০২০
কলকাতা